জলপাইগুড়ি, ২৮ আগস্টঃ তিন বছরের শিশু নিজের জামা খুলে অসুস্থ মাকে জলপট্টি দিচ্ছে।এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই তোলপাড় হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা সহ গোটা উত্তরবঙ্গ।এই ঘটনা অনেককেই নাড়িয়ে দিয়েছে।এরপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
ঘটনার খবর প্রচারিত হতেই জলপাইগুড়ি পৌরসভার পক্ষ থেকে মহিলাকে পৌরসভার একটি ভবনে আশ্রয় দেওয়া হয়।এই ঘটনার জন্য দায়ী মহিলার স্বামী।তার স্বামীকে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে জলপাইগুড়ি পৌরসভা।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত থেকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার বাইরে ৩ বছরের পুত্র সন্তানকে নিয়ে রাত কাটাচ্ছিলেন রেখা সরকার।করোনার জেরে পরিচারিকার কাজ হারিয়েছেন তিনি।এদিকে স্বামীও তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।এমতাবস্থায় নিজের সন্তানের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি রেখার পক্ষে।এই পরিস্থিতিতে নিজের সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিক্ষালয়েই রাত কাটছিল রেখা ও তার ৩ বছরের পুত্র সন্তানের।
বুধবার সন্তানকে নিয়ে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার প্রতিক্ষালয়ে আশ্রয় নেন তিনি।এদিকে দীর্ঘদিন ঠিক মতো খাবার না খাওয়ার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন রেখা দেবী।প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে থানার সামনেই মাটিতে বসে পড়েন মহিলা।এদিকে মা’কে এভাবে মাটিতে বসে থাকতে দেখে নিজের জামা খুলেই পাশের কল থেকে সেটি জলে ভিজিয়ে মায়ের মাথায় জলপট্টি দেয় রেখা দেবী ছোট্ট সন্তান।এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলেই।
সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রচার হতেই নড়েচড়ে বসে জলপাইগুড়ি কোতয়ালী থানার পুলিশ।রেখা দেবী ও তার পুত্র সন্তানের খাওয়ারের ব্যবস্থা করে পুলিশ কর্মীরা।এই দৃশ্য দেখে আবেগতাড়িত হয়ে থানায় ছুটে আসেন জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সৈকত চ্যাটার্জি।তিনি নিজেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করেন।সৈকত বাবু আরও বলেন, রেখা দেবী গত ১ বছর ৬ মাস থেকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেরাচ্ছেন।ইতিমধ্যেই তার স্বামীকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করা হয়েছে।তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সৈকত চ্যাটার্জি।