জেদের কাছে হেরে গিয়েছে দৃষ্টিহীনতা, ৯৫% শতাংশ দৃষ্টিহীন হয়েও স্কুলে শিক্ষকতা করছেন সুবিনয় দাস

জলপাইগুড়ি, ১১ নভেম্বরঃ জেদের কাছে হেরে গিয়েছে দৃষ্টিহীনতা। ৯৫% শতাংশ দৃষ্টিহীন হওয়ার পরেও দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে শিক্ষাকতা করে আসছেন সুবিনয় দাস। ব্ল্যাকবোর্ডে দিব্যি লিখে করাচ্ছেন শিক্ষকতা। তার পঠন-পাঠনে খুশি ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক সহ স্কুলের সহ শিক্ষকরা।


জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের নর্থ সার্কেলের বেলাকোবা অঞ্চলের কুমারপাড়া অতিরিক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবিনয় দাস। এই সার্কেলের একমাত্র দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী শিক্ষক হচ্ছেন তিনি। রোজ টোটোয় চড়ে কর্মক্ষেত্রে যাতায়াত করেন। স্কুলে টোটোতে নামার সাথে সাথেই ছাত্র-ছাত্রীরা হাত ধরেই তাকে নিয়ে যায় ক্লাসরুমে, চেয়ার এনে বসিয়ে দেয়। স্কুলের বাকি শিক্ষকদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষকতা করছেন সুবিনয় দাস। তার শিক্ষাকতা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই স্কুল পরিদর্শকের। ওই শিক্ষকের কাছে পড়াশুনা করে ভীষণ সন্তুষ্ট ছাত্র-ছাত্রীরা। স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকেরাও খুশি। 

শিক্ষক সুবিনয় দাস জানান, ২০১১ সালে এই স্কুলে যোগ দেন তিনি। স্কুলের পরিবেশ সেই সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তরিকতা এবং সহকর্মীদের সহযোগিতায় ১৪ বছর এক নাগারে শিক্ষকতা করা সম্ভব হয়েছে।  প্রথম যখন তিনি এই স্কুলে ঢোকেন সেই সময় তাঁর দৃষ্টিহীনতা ছিল ৭৫ শতাংশ। এখন সেটাই বেড়ে হয়েছে ৯৫ শতাংশ। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর দায়িত্ব থাকে তাঁর। এই সেশনে ক্লাস ওয়ানের ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।ব্রেইলের সাহায্য নিয়েই ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী-কন্যা রয়েছেন। তাঁরাও তার কাজে উৎসাহ জোগান। 


স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজিত পাল বলেন, অনেকদিন থেকেই সুবিনয় এই স্কুলে কাজ করছেন।দৃষ্টিহীনতা বাড়লেও তিনি তার স্বভাব মতই স্বাভাবিক নিয়মে বাচ্চাদের ক্লাস নেন। আমরাও চেষ্টা করি সাধ্যমত তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *