শিলিগুড়ি, ২৫ এপ্রিলঃ শিলিগুড়িতে নৃশংস খুনের মামলায় প্রায় ১১ বছর পর দুই অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করলো শিলিগুড়ি আদালত।ঘটনায় এক মহিলাকে ছয় মাসের কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারী নেপালের বাসিন্দা গঙ্গাভূষণ রাঠী এবং চন্দ্র প্রকাশ জুরেল শিলিগুড়িতে এসেছিলেন।এরপর ১১ জানুয়ারি গঙ্গাভূষণ রাঠীর ছেলে হরিবংশ রাঠীর কাছে একটি অচেনা নম্বরে ফোন আসে।তাকে জানানো হয় তার বাবা গঙ্গাভূষণ রাঠী এবং বাবার বন্ধু চন্দ্র প্রকাশ জুরেলকে অপহরণ করা হয়েছে।তাদের ছেড়ে দিতে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।এরপর হরিবংশ রাঠী নেপাল থেকে শিলিগুড়িতে পৌঁছে অপহরণকারীদের ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দেয়।টাকা দেওয়ার পরও দুজনকে ছাড়েনি অপহরণকারীরা।
পরে শিলিগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।ঘটনার তদন্তে নেমে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের ভিত্তিতে বোলপুর পুলিশের সহযোগিতায় দার্জিলিং মেল থেকে দুই অপহরণকারী সুরেন্দ্র কুমার মিশ্রা এবং অভিজিৎ বোসকে গ্রেফতার করে।
ধৃত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের ঘটনা জানতে পারে পুলিশ।খুন করে দুজনকে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।এরপর ২ ফেব্রুয়ারি সুকনার জঙ্গল থেকে গঙ্গাভূষণ রাঠী এবং চন্দ্র প্রকাশ জুরেলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
এদিকে অভিযুক্ত সুরেন্দ্র মিশ্রার মাটিগাড়ার বাড়িতে তার স্ত্রী মনিকা মিশ্রের কাছ থেকে মৃত গঙ্গাভূষণ রাঠীর মালা উদ্ধার হয়।জোড়া খুনের ঘটনায় সুরেন্দ্র মিশ্রা তার স্ত্রী মনিকা মিশ্রা, অভিজিৎ বোস এবং রাজীব রায়কে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করা হয়।এই মামলা প্রায় ১১ বছর ধরে চলে।মামলায় ৪৬ জনের সাক্ষী গ্রহণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক সেশন ফার্স্ট কোর্টের বিচারপতি অনিতা মলহোত্রা সুরেন্দ্র মিশ্রা এবং অভিজিৎ বোসকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করে।এছাড়া মনিকা মিশ্র অসুস্থ হওয়ার কারণে তাকে ছয় মাসের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করে।যদিও চতুর্থ অভিযুক্ত রাজীব রায়ের এই ঘটনায় কোন ভূমিকা না থাকায় তাকে বেকসুর খালাস করা হয়।