শিলিগুড়ি, ২৬ মার্চঃ শিলিগুড়িতে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল শিশু বিক্রি।গোটা ঘটনার পর্দা ফাঁস করলো শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ(এসওজি) এবং মাটিগাড়া থানার পুলিশ।ঘটনায় গ্রেফতার চক্রের ৪ সদস্য।উদ্ধার হয়েছে ৭ দিনের এক নবজাতক শিশু।
ধৃতদের মধ্যে ৩ জন মহিলা এবং একজন ব্যক্তি।অভিযুক্তদের নাম প্রভা দেবী, বীণা দেবী, গৌরি বাহাদুর ছেত্রী এবং প্রতীক দেবনাথ।এদের মধ্যে প্রতিক দেবনাথ ও গৌরি বাহাদুর ছেত্রী সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী।প্রভা দেবী বিহারের পাটনা এবং বাকি ৩ জন শিলিগুড়ির বাসিন্দা।ধৃতদের মধ্যে দুই মহিলা শিলিগুড়ি আইভিএফ সেন্টারের কর্মী।উদ্ধার হওয়া ৭ দিনের নবজাতক শিশুকে সিডব্লিউসি এর নির্দেশে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়িতে এই চক্র চালাতো বীণা, গৌরি এবং প্রতিক।গৌরি এবং প্রতিক বিভিন্ন জায়গায় প্রথমে নিঃসন্তান দম্পতির খোঁজ চালাতো।বীণা বিহারে তাঁর নেটওয়ার্কের দ্বারা গর্ভবতী মহিলাদের খোঁজ করতো।আর্থিকভাবে দুর্বল মহিলাদের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সন্তান জন্মের আগেই গর্ভেই সেই সন্তান কিনে নেওয়া হত।এরপর শিশু জন্মের এক সপ্তাহের মধ্যে বীণা নবজাতক শিশুদের নিয়ে আসতো এবং লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে সেই শিশুকে বিক্রি করা হতো।দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এই চক্র।
সম্প্রতি আরও এক নবজাতককে শনিবার বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল শিলিগুড়িতে।পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার প্রভা দেবী ৭ দিনের এক শিশুকে নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল।এদিকে গোপন সূত্রে এই খবর পেয়ে মাটিগাড়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায় এসওজি।প্রভা দেবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্দেহ হয় পুলিশের।এরপরই শিশু সহ মহিলাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করেই গোটা ঘটনা সামনে আসে।এরপরই চক্রের বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ।জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া শিশুটি কয়েক লক্ষ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা ছিল।
শিলিগুড়িতে এই ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ।তদন্তে নেমেছে ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্ট।আজ ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার বলেন, এসওজি এবং মাটিগাড়া থানার পুলিশ শিশু বিক্রি চক্রের পর্দা ফাঁস করেছে।গ্রেফতার হয়েছে ৪ জন।উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ঘটনার তদন্ত চলছে।