শিলিগুড়ি, ৯ ফেব্রুয়ারিঃ বিরল থেকে বিরলতম রোগের চিকিৎসায় সফল হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো শিলিগুড়ির নিউটিয়া গেটওয়েল হেলথকেয়ার সেন্টারের ডাক্তারদের একটি বিশেষ দল।
জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে ৫ বছর বয়সী একটি শিশু হাঁটাচলায় অসুবিধা, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া(অপথালমোপ্লেজিয়া), কোয়াড্রিপারেসিস এবং তন্দ্রাজনিত রোগ নিয়ে নিউটিয়া গেটওয়েল হেলথকেয়ার সেন্টারে ভর্তি হয়।পরীক্ষা করে গিলেন-বার সিনড্রোম নামে বিরল রোগ ধরা পড়ে তার।
এরপর ডাক্তারদের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়।যে দলে ছিলেন পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি ডঃ জীবন সিলওয়াল, পেডিয়াট্রিক্স এবং নিওনাটোলজি পরামর্শদাতা ডঃ প্রিন্স পারেখ, পরামর্শদাতা পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি ডঃ সুমন্ত্র কুমার রাউত, পরামর্শদাতা নেফ্রোলজি ডঃ অজিত কুমার সিং, পরামর্শদাতা নিউরোলজি ডাঃ তন্ময় পাল ছাড়াও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা।
গিলেন-বার সিনড্রোম চিকিৎসাক্ষেত্রের জরুরি অবস্থাকে বোঝায়।এই বিরল রোগ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে মানুষের স্নায়ুকে আক্রমণ করে।অঙ্গপ্রত্যঙ্গে দুর্বলতা এবং ঝিমুনি সাধারণত এই রোগের প্রধান লক্ষণ।এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরকে অবশ করে দেয়।যার জন্য শীঘ্রই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়।
প্রথমদিকে ডাক্তারদের দল এবং পিআইসিইউ টিমের সর্বক্ষণ যত্ন সত্বেও শিশুটি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিল না।এরপর ডঃ সুমন্ত্র কুমার রাউত, ডঃ অজিত কুমার সিং প্লাজমাফেরেসিসের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু করেন।১০টি সেশনের মধ্য দিয়ে প্লাজমাফেরেসিস করা হয়।এরপর চিকিৎসায় ভালো সাড়া মেলার পর ভেন্টিলেটার থেকে বের করে তাকে ছুটি দেওয়া হয়।
ডঃ জীবন সিলওয়াল এবং ডাঃ প্রিন্স পারেখ বলেন, মেয়েটি এখন সুস্থ হয়ে উঠছে।সে বর্তমানে সবার সঙ্গে কথাও বলছে।ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে সে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠবে।
ডঃ প্রিন্স পারেখ শহরের এক স্বনামধন্য শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার।তিনি শিলিগুড়ির একজন উজ্জ্বল নিওনাটোলজিস্ট শিশুদের যত্ন সহকারে চিকিৎসা করেন।বিশেষ করে নিওনাটোলজি, ভ্যাকসিনোলজি, শৈশব হাঁপানি, পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজি, সংক্রামক রোগ, আচরণগত সমস্যার চিকিৎসা ও পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন।
শিশুটির বাবা জানান, যখন আমাদের মেয়ে অজ্ঞান ছিল, তখন আমরা তাকে ফিরে পাওয়ার আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম।কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে, সঠিক রোগ নির্ণয়, সার্বক্ষণিক যত্ন এবং টিমওয়ার্কের সাহায্যে আমরা আমাদের মেয়েকে হাসিমুখে ফিরে পেয়েছি।আমরা ডাক্তারদের এবং বিশেষ করে পুরো পিআইসিইউ টিমের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ যারা আমাদের সন্তানকে বাঁচানোর জন্য দিনরাত কাজ করেছেন।