সিকিম বিপর্যয়ঃ গাছ আঁকড়ে বাঁচলেন বাবা, কিন্তু হাত ধরার আগেই ভেসে গেল তিন সন্তান

শিলিগুড়ি, ৬ অক্টোম্বরঃ সিকিমের বিপর্যয়ের দিন থেকে একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ঘুরছিল। এক ব্যক্তি গাছের মগডালে উঠে গাছটি জড়িয়ে ধরে আছেন। এদিকে নীচ দিয়ে তিস্তার জল যাচ্ছে। এমন অবস্থা দেখে প্রত্যেকেই প্রার্থনা করেন সকলে যাতে সুস্থ থাকেন। কিন্তু শিলিগুড়ির বাসিন্দা ওই ব্যক্তি  গাছকে জড়িয়ে বেঁচে ফিরলেও তিস্তার গ্রাসে হারিয়ে গিয়েছে তাঁর ৩ সন্তান।চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি সন্তানদের।মৃত অবস্থায় এক ছেলে উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ তাঁর দুই মেয়ে। চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু দেখে এখন অঝোরে কেঁদেই চলেছেন  ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মহারাজা কলোনির বাসিন্দা মহম্মদ মুক্তার।


কাজের জন্য সিকিমের রংপোতে ৩ সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মহম্মদ মুক্তার। স্ত্রী বিহারে চলে গিয়েছেন। সেখানেই থাকেন। ঘটনার রাতে সন্তানদের নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন মুক্তার।স্থানীয়দের আওয়াজে ঘুম ভাঙে।এরপর চোখ খুলে দেখতে পান ঘরে প্রবল বেগে জল ঢুকে পড়েছে।দরজা খুলতেই গোটা ঘর জলে ডুবে যায়।তিন সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগটুকুও পাননি।

মুহুর্তের মধ্যেই তিস্তার গ্রাসে চলে যায় তাঁর বাড়ি। চোখের সামনে ভেসে যায় দুই মেয়ে ও এক ছেলে। কোনমতে সেখানে থাকা একটি গাছের উপরে উঠে গাছ জড়িয়ে বাঁচেন মহম্মদ মুক্তার।রাতভর বৃষ্টিতে গাছটিকে জড়িয়ে ছিলেন।এরপর সকালে তাকে উদ্ধার করা হয়।বুধবার দুপুরে উদ্ধার হয় ছেলের দেহ।শিলিগুড়িতে পৌঁছে বৃহস্পতিবার ছেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।


ভয়াবহ রাতের সেই স্মৃতি বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তিনি।সবকিছু হারিয়ে বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়েছেন।এমনকি নিখোঁজ দুই মেয়ের খোঁজে যেতেও পারছেন না।তাঁর চোখে মুখে শুধুই আতঙ্কের ছাপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *